২০শে মে, ২০২৫ ইং, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২০শে জিলক্বদ, ১৪৪৬ হিজরী

দাবানল ও বন্যার রূপ

স্টাফ রিপোর্টারঅস্ট্রেলিয়া উন্নত ও আধুনিক রাষ্ট্রের দাবিদার হলেও গত কয়েকবছর ধরে দুনিয়ার অন্যতম প্রধান সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বহুবার স্থানে স্থানে দাঙ্গা হয়েছে। মুসলমানদের সাথে নিকৃষ্ট ধরণের আচরণ হয়েছে। সংকীর্ণ মনা বে-দ্বীন খৃষ্টানরা অনেক এলাকায় মুসলিমদের বিনা কারণে হত্যা ও আঘাত করেছে। দোকানপাট তছনছ, বাড়িঘর ভাঙচুর, নারীদের হয়রানি, শিশু বৃদ্ধ এমনকি রোগীদেরও তারা হয়রানি কম করেনি। রাষ্ট্র এসব ক্ষেত্রে ছোট মনের পরিচয় দিয়েছে। নামে উন্নত দেশ হয়েও, অস্ট্রেলিয়া মানবাধিকারের তোয়াক্কা করেনি। সিডনি, মেলবোর্ন, পার্থ ইত্যাদিতে মুসলিমরা থাকেন বটে, কিন্তু তাদের মনে যখন তখন সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার হওয়ার আতঙ্ক বিরাজ করে। দুনিয়ার একটি মুসলিম দেশও অমুসলিমদের জন্য এমন নয়। এরপরও অস্ট্রেলিয়া উন্নত সভ্য। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অনেক অগ্রসর হলেও তারা যে আল্লাহর বান্দা, চরম অসহায় এ বিশ্বাসটি তাদের মনে নেই। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে বহু উঁচুতে মাটি থেকে পাহাড় সমান উচ্চতায় আগুন লেগে কমপক্ষে একশ কোটি ধরনের বিচিত্র প্রাণ জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে গেল। মাসের পর মাস আগুন নিয়ন্ত্রন তো দূরের কথা, কোনো কিছুই অস্ট্রেলিয়ানরা করতে পারে নি। এক জায়গায় আগুন কমে এলে হয়তো ফায়ার ফাইটাররা নিয়ন্ত্রনের ঘোষণা দিয়েছে। এর কিছুক্ষণ পর দেখা গেছে আরো কয়েকশ মিটার দূর দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। কোথাও আগুন নেই মনে করে যখন লোকেরা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিচ্ছে, মিডিয়া সংবাদ প্রচার করছে, দেখা গেল কয়েক মাইল দূরে অজানা উৎস থেকে লাফিয়ে আগুন চলে এসেছে। হাজার হাজার বর্গ মাইল বন ও জীব বৈচিত্রের এলাকা জ্বলে পুড়ে অঙ্গার। কোথাও উদ্ধারকারী গেলে জীব জন্তু ও প্রাণীকুল অসহায়ের মতো এসে মানুষকে জড়িয়ে ধরেছে। বিশ্ব মিডিয়ার ভান্ডারে এ ধরনের কোটি কোটি ইমেজ সুরক্ষিত আছে। এরপরও অহংকারী মানুষ নিজের অসহায়ত্ব স্বীকার করে না। সৃষ্টিকর্তার সামনে মাথানত করে না। আল্লাহর কাছে নাজাত চায় না। এক পর্যায়ে অস্ট্রেলিয়ার গুটিকয় মুসলমান রহমতের বৃষ্টির জন্য ‘ইস্তিসকার নামাজ’ আদায় করে। রহমতের বৃষ্টি বর্ষিত হয়। দিনে দিনে দাবানল বলতে গেলে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে। মানে, প্রাকৃতিকভাবেই নিভে যায়। প্রচন্ড ও প্রাণঘাতি গরম কমে আসে। এরপর নাফরমানরা সতর্ক না হয়ে আরো মানবতাবিরোধী কাজকর্মে দৃঢ়তা দেখায়। এই অস্ট্রেলিয়াতেই পানির অভাব দেখিয়ে কয়েক হাজার উট গুলি করে হত্যা করা হয়। অবলা এসব প্রাণী বেঘোরে প্রাণ দেয় সভ্য একদল মানুষের হাতে। সরকার ভাবে এসব প্রাণের কোনো মূল্য নেই। এসব জীবন কেড়ে নেয়ার একচ্ছত্র অধিকার তাদের। এক্ষেত্রে মহান আল্লাহর কোনো নির্দেশনা নেই। দুনিয়ার ঈমানদার ও জ্ঞানী মানুষের কোনো পরামর্শই তাদের কানে পৌঁছেনি। এরই মধ্যে এসে যায় বন্যা। মিডিয়ার কল্যানে দেখলাম, অস্ট্রেলিয়ার বহু এলাকা পানির নিচে। বাড়ি-ঘর তছনছ। গ্যাস, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। সাজানো সংসার কর্দমাক্ত। গাড়ি-ঘোড়া পর্যন্ত জলমগ্ন। জীবন যাত্রা ব্যাহত। দুনিয়ার সকল সুবিধা যাদের হাতের মুঠোয়, তারা মহান সৃষ্টিকর্তার সর্বময় ক্ষমতার ব্যাপারে অবিশ্বাসী জীবন যাপন করছে। বহু নিদর্শন তাদের আল্লাহ দেখাচ্ছেন। তাদের সামনে আছে, পবিত্র কোরআন ও হাদিসের বাণী। জীবন্ত বার্তাস্বরূপ রয়ে গেছেন বিশ্বাসী মুসলমানরা। আল্লাহর গজবে ধ্বংস হওয়ার আগে অবিশ্বাসীরা কি বুঝবে? পরকালের আজাবে নিপতিত হওয়ার আগে বিধর্মীদের চোখ খুলবে কি?

Share Button


     এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ